গত বছরের আগস্টে রাঙামাটির ভূষণছড়া ইউনিয়নে এসেছিলাম। কাপ্তাই হ্রদের বেশ গভীরে ইউনিয়নটি। স্পিডবোটে প্রায় দু'ঘণ্টা লেগে যায়। সেদিন ভূষণছড়ার আরো দু'এক জায়গা ঘুরে উজঙ্গ্যাছড়ি বাইজ্জাঘাটে পৌঁছালাম। সেখানে থা হলো নলিনীকুমার চাকমার সঙ্গে। দলিলপত্র সহযোগে নলিনী তাঁর জমির সমস্যা তুলে ধরেন।
নলিনীর বাবা সত্যবান চাকমার ভূষণছড়া মৌজায় তিন একর জমি আছে যার হোল্ডিং নম্বর আর-১৬৮। তাঁর ভাই কান্দুইজ্যা চাকমারও পাঁচ একর জমি আছে একই মৌজায় যার হোল্ডিং নম্বর আর-৫৪। এছাড়া কান্দুইজ্যা কাপ্তাই হ্রদের জলেভাসা জমির চার একরের একসনা বন্দোবস্তিও পেয়েছেন। জলে ভাসা জমি হলো সেই জমি যা শুকনো মৌসুমে ভেসে ওঠে এবং আবাদ করা যায়; এর স্থায়ী বন্দোবস্তি দেওয়া হয় না, কেবল এক বছরের বন্দোবস্তি দেওয়া হয়। সত্যবান ও কান্দুইজ্যার এই মোট বারো একর জমি ১৯৭৪ সালে রেজিষ্ট্রি করা হয়। কিন্তু ১৯৮৪ সালে বরকল গণহত্যার ঘটনায় তাঁরা দু'ভাই-ই জঙ্গলে পালিয়ে যান।
আমেনা মোহসিনের দ্য পলিটিক্স অব ন্যাশনালিজম বইয়ের তথ্য অনুযায়ী ১৯৮৪ সালের ৩১শে মে ২৬ বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ১৭ বিডিআর ব্যাটালিয়ন মিলে বাঙালিদের সহায়তায় বরকলে এই গণহত্যা সংঘটিত করে। এতে ১১০ জন পাহাড়ি শিশু ও নারী-পুরুষ নিহত হন। অনেক পাহাড়ি নারীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।
সত্যবান ও কান্দুইজ্যা উভয়েই এলাকায় ফেরেন ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর। আসার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা নিজের জমি ফিরে পান কারণ সেখানে অন্য কেউ ছিল না। তাঁরা সেখানে ধান আবাদ করেন এবং গাছ লাগান। সমস্যা শুরু হয় ২০০৬ সালে যখন তিনটি বাঙালি পরিবার ঐ ১২ একর জমি নিজেদের বলে দাবি করতে শুরু করে। এজন্য তারা নলিনীসহ আরো কয়েকজনের নামে তিনটি মামলা করে। সিদ্দিকুর রহমান, ফজলুর রহমান এবং আয়েজ আলী মামলাগুলো করেন। তিনটিরই প্রধান আসামী নলিনী। তাঁর বক্তব্য এ মামলাগুলোর পেছনে আছেন খলিলুর রহমান বলে এক ব্যক্তি। মামলাগুলো হওয়ার পর জেলা প্রশাসক স্থগিতাদেশ জারি করে বিবদমান জমিতে উভয় পক্ষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন।
নলিনী জানান তিনিসহ অন্যান্য আসামী জমিতে না গেলেও অপর পক্ষ জমিতে চাষ করছে। নিয়মানুযায়ী আদালত থেকে স্থগিতাদেশ স্থানীয় থানায় পৌঁছানোর পর পুলিশের কর্তব্য তার বাস্তবায়ন করা। কিন্তু বাস্তবে পুলিশকে টাকা দিয়ে কাজটি করাতে হয়। দরিদ্র দিনমজুর নলিনী কয়েকবার চেষ্টা করেও পুলিশ আনতে পারেননি।
নলিনী তাঁর বৃত্তান্ত শেষ করলে এগিয়ে আসেন সাদেক আলী। তাঁর বক্তব্য ২০০৮ সালে তিনি খলিলুর রহমানের কাছ থেকে তিন একর জমি কেনেন। সাদেক জানান খলিলুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এ জমির বন্দোবস্তি পান ১৯৮২-৮৩ সালে যার হোল্ডিং নম্বর আর-৭৮৭, মৌজা নং ১৪৮ ভূষণছড়া।
আলোচনার সময় উপস্থিত ভূষণছড়া মৌজার হেডম্যানের সঙ্গে আলাপ করে মোটামুটি যা বুঝতে পারি–সাদেক খলিলুরের কাছ থেকে যে জমি কিনেছেন তা পড়েছে নলিনীর কাকা কান্দুইজ্যা চাকমার জমিতে। নলিনীর মতে তাঁর কাকার জমি সরকার ডবল বন্দোবস্তি দিয়েছে।
পুরোটা মিলে দাঁড়াল এই– নলিনীর বাবা-কাকার নামে সরকার যে জমি ১৯৭৪ সালে বন্দোবস্তি দিয়েছিল তা আবার বন্দোবস্তি দেয় কিছু বাঙালির কাছে ১৯৮২-৮৩ সালে। এদের অন্যতম খলিলুর তা বিক্রি করেন সাদেক আলীকে।
দ্বৈত বন্দোবস্তি এবং সেই জমি আবার আরেক বাঙালির কাছে বিক্রির এ ঘটনা একটি কি দু'টি নয়, এটি সারা পার্বত্য চট্টগ্রামে পরিব্যপ্ত। পাহাড়িদের ভূমি গ্রাসের যে প্রক্রিয়াটি মূলতঃ জেনারেল জিয়ার আমলে শুরু হয় সেটি পরবর্তী প্রত্যেকটি সরকার চালিয়ে গেছে। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর পাহাড়িদের ভূমি বেদখলের সরকারি প্রচেষ্টা বন্ধ হবে বলে আশা করা হলেও এখনও তা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায়, প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে হয়েই চলেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমির বিরোধ নিয়ে আজকের এই ভজঘট অবস্থার শেকড় লুকিয়ে আছে এ অঞ্চলে আশির দশকে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে পাহাড়িদের সশস্ত্র আন্দোলন ঠেকাতে সরকারের নেওয়া জনমিতিক পরিবর্তনের কৌশলের মধ্যে।
পাহাড়িদের স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন এম এন লারমা। ১৯৭০-এর ঐতিহাসিক নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত স্বতন্ত্র সদস্যদের অন্যতম এম এন লারমা ও তাঁর সতীর্থরা পাহাড়িদের স্বায়ত্তশাসনের জন্য যে আন্দোলন শুরু করেন তা অব্যাহত থাকে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও। এ বিষয়ে সংসদের ভেতরে এবং বাইরে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ব্যক্তিগত সাক্ষাতে তাঁর বক্তব্য আজ ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। তবে তাঁর সব তৎপরতাই ব্যর্থ হয়। শোনা যায় বঙ্গবন্ধু তাঁকে সামরিক অভিযান এবং পাহাড়ে বাঙালি বসিয়ে নিজ বাসভূমে পাহাড়িদের সংখ্যালঘু করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তবে তিনি বেঁচে থাকা পর্যন্ত পাহাড়িরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর সামরিক শাসন জারি ও রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধ হলে লারমা ও তাঁর রাজনৈতিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি আত্মগোপন করে এবং সশস্ত্র আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়।
পাহাড়িদের সশস্ত্র আন্দোলন ঠেকাতে সরকার সেনা অভিযান, পাহাড়িদেরকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ, হত্যা ও লুটতরাজ চালিয়েছে কিন্তু এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘস্থায়ী কৌশলটি ছিল এ অঞ্চলে সমতলবাসী বাঙালিদের পুনর্বাসন। ১৯৮০ সাল থেকে শুরু করে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সরকার সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় চার লাখ বাঙালিকে পুনর্বাসন করে যাঁরা এ অঞ্চলে সেটেলার বলে পরিচিত। এতে করে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের যে প্যাঁচে ফেলা গেছে তা থেকে তাঁরা জন্মেও বেরোতে পারবেন কিনা সন্দেহ।
যাই হোক, যুদ্ধের বিভিন্ন পর্যায়ে দুই পক্ষ আলোচনার টেবিলে বসলেও শান্তি প্রক্রিয়াটি জোরদার হয় ১৯৯০-এর দশকে দেশে সামরিক শাসনের অবসান ঘটলে। সরকার পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিলে নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ভারত থেকে শরণার্থীরা ফিরতে শুরু করেন। স্থানীয় জেলা প্রশাসনকে তাঁদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই সে প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়ে। এর জন্য দায়ী একদিকে বাঙালি অধ্যুষিত প্রশাসনের অনীহা আর অন্যদিকে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে বাঙালি বসতিস্থাপনকারীদের প্রবল প্রতিরোধ। প্রশাসনের কোনো কোনো পর্যায়ে সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ ক্ষেত্রে পিছু হটতে হয়েছে।
১৯৯৭ সালে সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে 'পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি' যেটি শান্তিচুক্তি নামেই বেশি পরিচিত, স্বাক্ষরিত হলে যুদ্ধের অবসান হয় আর তার ফলে আরো বহু শরণার্থী ফেরত আসেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে খুব কমই নিজেদের জায়গা-জমি ফেরতে পেয়েছেন। ভূষণছড়া ইউনিয়ন থেকে প্রায় ১২০০ পরিবার ভারতে শরণার্থী হয়েছিল যাদের প্রায় সকলেই চুক্তি পরবর্তী সময়ে ফিরে আসে কিন্তু স্থানীয়রা জানান এদের মধ্যে খুব কমই নিজেদের জমিতে ফিরতে পেরেছে। যাঁরা জমি ফেরত পেয়েছেন তাঁরাও নলিনীকুমারের মতো বাঙালিদের সঙ্গে মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়েছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে জনসংহতি সমিতির চুক্তিপূর্ব দর কষাকষিতে ভূমিবিরোধ ছিল সবচেয়ে প্রধান বিষয়গুলোর একটি। সমিতি চেয়েছিল বিষয়টির রাজনৈতিক সুরাহা যার অংশ ছিল বাঙালি বসতিস্থাপনকারীদের সমতলে ফিরিয়ে নেওয়া এবং তারপর ভূমি সংক্রান্ত বাকি জটিলতার সমাধান। সরকার কোনোভাবেই তাতে রাজী না হওয়ায় বেছে নেওয়া হয় ভূমি কমিশন গঠনের পথ। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত কোনো বিচারপতির নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন গঠন করা হবে যা ভূমি সংক্রান্ত সমস্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করবে। এ কমিশনের সদস্যরা হলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন সার্কেল চিফ বা রাজা এবং তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা। তাঁদের কাজ হবে মাছের কাঁটা বাছার মতো করে হাজার হাজার ভূমি বিষয়ক অভিযোগের একটি একটি করে সমাধান করা।
শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পরের যে চার বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল ভূমি কমিশনের কাজ সেভাবে আগায়নি। বিএনপি-জামায়াত শান্তিচুক্তিবিরোধী তাই তাদের আমলে কমিশন শুধু না, চুক্তি সংক্রান্ত প্রায় সব কার্যক্রমই বন্ধ ছিল। ২০০৮-এ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর কমিশন আবার ঘুম ভেঙে জেগে উঠেছে। কিন্তু কাজে নেমেই এর নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী যা করেছেন তা শান্তিচুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি জরিপ করার জন্য সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ঘ(৪) অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা আছে যে, ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী, অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু ইত্যাদির পুনর্বাসন ও ভূমিহীন পাহাড়িদের জমি বণ্টনের পরই কেবল ভূমি জরিপ করা হবে। ভূমির বিরোধ নিষ্পত্তির আগে ভূমি জরিপ না করার এই সিদ্ধান্ত স্পষ্টতই এ কারণে যে জমির প্রকৃত মালিক না থাকা অবস্থায় যদি জরিপ হয় তবে বেদখলদারেরই মালিক হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান সাহেবের এ নির্দেশের আগে জুন মাসে কমিশনের সদস্য তিন সার্কেল চিফ তাঁকে এক চিঠি দেন যেখানে এসব বিষয় উল্লেখ করে তাঁরা অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান তাঁদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করেই একক সিদ্ধান্তে ভূমি জরিপের নির্দেশ দিয়েছেন।
এবার শেষ প্রশ্ন, যেটি আসলে সবচেয়ে শুরুর প্রশ্ন। এদেশের পাহাড়ি জনগোষ্ঠী সম্পর্কে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর মনোভঙ্গিটি পরিষ্কার কিন্তু আওয়ামী লীগ আসলে কী চায়? পাহাড়ে বাঙালি বসতিস্থাপনকারীদের ফিরিয়ে আনা ও তাদের সম্মানজনক পুনর্বাসনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীর আগ্রহ সত্ত্বেও এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ঘোর আপত্তি থেকে তাদের ইচ্ছাটা অনেকখানি স্পষ্ট হয়ে যায়। সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরা ইত্যাদি এবং জাতীয় নিরাপত্তার জুজু দেখিয়ে পাহাড়িদের জমি জবরদখল করার খেলাটি খেলে যেতেই তারা বেশি আগ্রহী। পাহাড় সমস্যার প্রকৃত সমাধানে আগ্রহী ব্যক্তি রাজনৈতিক দলটিতে নেই তা বলছি না তবে এদেশের আদিবাসীদের মতোই দলে তাঁরা সংখ্যায় কম, কোণঠাসা ও কমজোর।
শেষে এসে ভাবছি লেখার শিরোনামটা ভুল হলো কিনা। হাজার হাজার পাহাড়ির ভূমির অধিকার বলতে আজ শুধুই সম্বল বাপ-দাদার ভিটে-জমির দলিল কিংবা প্রথাগত অধিকারের কাগুজে আইন। যে ভূমি তাঁরা নিজের বলে দাবি করছেন তা আজ দু'তিন দশক ধরে অন্যের অধিকারে। মন্ত্রী-এমপি-গবেষক-সাংবাদিক যাঁদেরকেই তাঁরা কাছে পান নিজেদের অধিকারের যুক্তিপ্রমাণ মেলে ধরে জমি ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করেন। তাঁরা যাতে জমি ফেরত পান সেজন্য কেউই কিছু করতে পারেননি। ফলে ভূমি জরিপ হলে বাস্তব অবস্থার খুব একটা হেরফের ঘটার সম্ভাবনা দেখি না কেবল পাহাড়িদের প্রত্যাশার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেওয়া ছাড়া। বাস্তবে সে পেরেক কি কবেই ঠোকা হয়ে যায়নি?
জুলাই ২০১০