শান্তিশর্মা: এক গান্ধর্বীর কথা

dithi_hasnat
Published : 14 June 2008, 07:46 AM
Updated : 14 June 2008, 07:46 AM

কখনও ভাবিনি আমার শান্তিদিদিকে নিয়ে এভাবে লিখতে বসব। শ্রীরাম ভারতীয় কলাকেন্দ্রের নাম আমার স্কলারশিপ ফর্মে আমি লিখেছিলাম শুধু তাঁরই জন্য।

তখন ক্লাস নাইনে পড়ি, ছায়ানটের ছাত্রী। একদিন সন্‌জীদা খালামনি এসে

বললেন, "আজকে তোরা কেউ ক্লাসের পর বাড়ি যাবি না। গুণী এক শিল্পীর গান শুনে যাবি।" ক্লাশ শেষে সবাই ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের বড় হলরুমে গেলাম। শিল্পী এসে বসলেন। দুপুর ১২টায় ভৈরব গাওয়া শুরু করলেন তিনি। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের তখন কিছুই বুঝি না। কিন্তু ভাল লাগতে শুরু করল। শিল্পী ভোরের পবিত্র আবহ তৈরি করলেন সুরের জাল বিস্তার করে। তখন থেকেই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত, দিদি এবং দিদির ব্যক্তিত্ব আমাকে খুব আকৃষ্ট করল। এরপর তিনি ২০০৩ সালে বেঙ্গলের ওয়ার্কশপে এলেন। তখনও ভীষণ ইচ্ছা ছিল তাঁর ক্লাসগুলোতে অংশগ্রহণ করার। কিন্তু সুযোগ হয়নি।

তারপর আরও দুটো বছর কেটে গেছে। অনেক কিছু করে যাচ্ছি — মাস্টার্সের পড়াশোনা, স্কুলে পড়ানো — কিন্তু কোনো কিছুই যেন করা হচ্ছে না ঠিকভাবে, তাই অস্থির লাগে। ঠিক করলাম, এভাবে না, গানটা আরও ভালভাবে করা দরকার। অনেক দিনের ইচ্ছা, সব ছেড়ে সবার থেকে দূরে গিয়ে গান করার চেষ্টা করব ঠিকভাবে। কীভাবে তা জানি না। তারপর দিদির কারণেই স্কলারশিপ ফর্মে ডিগ্রী বেছে নিলাম, বেছে নিলাম শ্রীরাম ভারতীয় কলাকেন্দ্র।

কোথা থেকে জোর পেয়েছি, ছুটে গেছি জানি না। শ্রীরাম ভারতীয় কলাকেন্দ্রে যেদিন প্রথম পা রাখলাম এক অদ্ভুত ভাল লাগায় মন ভরে গেল। কেন্দ্রের সিঁড়ির সামনে যে কী শান্তি! যেখানে ৮০ বছর ধরে অসাধারণ সব গুরুদের পদচারণা। ধীরে ধীরে কেন্দ্রের ইতিহাস সম্পর্কে জেনে আরও ভাল লাগল। যেখানে হাফিজ আলি খান, পণ্ডিত অমরনাথ, গুরুজী মুনাব্বর আলী খাঁ সাহেব, দিলীপ চন্দ্র বেদী (আত্রা-গোয়ালিয়র), শান্তি বীরানন্দ, আমজাদ আলী খান, নন্দিনী শিং, হাসমত খান চরঞ্জিত মোনি, শম্ভু মহারাজ, বীরজু মহারাজ, লীলা স্যামসন, দুর্গালালজী গুররুজীদের পদচারণায় কেন্দ্র নিত্যই মুখরিত থাকত।

দু'দিন পর ক্লাস শুরু হল। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি কবে শান্তিদিদির সাথে দেখা হবে। দুইমাস কেটে গেল। দিদিরই ছাত্রী সোনিয়া রায়ের কাছে শিখে যাচ্ছি, মনে মনে অপেক্ষা কখন শান্তিদিদির দেখা পাব। প্রিন্সিপাল আমাকে তাঁর কাছে যেতে দিচ্ছেন না। সোনিয়া দিদিও না। শেষে একদিন দূর্গাপূজার কারণে সোনিয়া রায় কেন্দ্রে আসলেন না। ফোনে জানালেন, যেন আমার তানপুরাটা শান্তিদিদিকে দিয়ে আসি। গেলাম ক্লাসে, ধীরপায়ে গেট খুললাম। দেখি আসনে তিনি বসে আছেন। আমার কাছে সৌন্দর্যের অপরূপ প্রতিমূর্তি তিনি। বা সুরের সাক্ষাৎ প্রতিচ্ছবি। প্রণাম করলাম, যখন বাংলাদেশের ICCR ছাত্রী শুনলেন বললেন, তোমার তো আমারই কাছে আসবার কথা, তোমাকে কেন প্রিন্সিপাল আসতে দেয়নি? তারপর গান শুনলেন, বললেন এখন থেকে তুমি আমার কাছে আসবে। আমার শিষ্য করে নিলাম, আর যাতে তোমার প্র্যাকটিস বেশি হয় এবং অল্প সময়ে বেসিক ভাল হয় তাই সোনিয়ার (তাঁর সিনিয়র শিষ্যা) ক্লাসও করবে প্রতিদিন।

খুশিতে পাগল হবার দশা। দিদির সামনে আমি স্থির রইলাম। তিনি বললেন অ্যাপ্লিকেশন করে আমার সাইন নিয়ে যাবে যাতে কুটিল (প্রিন্সিপাল মীরা মহাপাত্র, যাকে তিনি একেবারেই পছন্দ করতেন না তার কুটিল স্বভাবের জন্য) কোনো ঝামেলা করতে না পারে।

শুরু হল আমার অতি কাক্সিক্ষত জীবন। সারাদিন গান, ক্লাস করা, দিদির গান শোনা, সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শোনা এবং দেখা — গানের মধ্যেই সবকিছু। পাশেই কামানী অডিটোরিয়াম। দিল্লীর সেকেন্ড বেস্ট অডিটোরিয়াম। বড় বড় শিল্পীদের পারফর্মেন্স লেগেই থাকে, আমার কাছে এ অডিটোরিয়াম তীর্থস্থান বরাবর। দিদি বললেন, প্রথম একমাস ক্লাসে বসে শুধু শুনতে। এরই মাঝে একদিন গান শুনতে চাইলেন। বললেন, বাংলা গান করো নজরুল বা টেগোর। আমি 'ধায় যেন মোর সকল ভালবাসা' গাইলাম কোনো যন্ত্র ছাড়া। ভয়ে ছিলাম। গান শুনে তিনি বললেন "বেটি, তুম বহত সুর মে গায়া।" দিদির মুখের এতটুকু কথা শুনে আমি ধন্য। অনেক উৎসাহী হয়ে গেলাম। তারপর একদিন তিনি বললেন, এবার তুমি আমার কাছে এসে বসো, আর আমার সাথে গাও। বলে আমায় ভৈরব — সেই ভৈরব যা ২৫ বছর আগে ছায়ানটে শুনেছিলাম — শেখানো শুরু করলেন। আমার সামনে সুরের পৃথিবী উন্মোচিত হতে শুরু করল। সেখানে কোনো গ্লানি নেই, নেই কোনো কলঙ্ক, আছে শুধু সুরের একেকটি রূপ। কখনও শান্ত সৌম্য গম্ভীর ভৈরব, কখনও পবিত্র আহীর ভৈরব, কখনও ভৈরবীর নটখট রূপ, কখনও নীকষ কালো আধাঁরে মালকোষে অবগাহন।

দিদির যত কাছে যেতে শুরু করলাম, নিজেকে ভুলে অপার্থিব সব সুর আবিষ্কার করতে শুরু করলাম। এই ঘরানা সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে শুরু করলাম। ইন্দোর-কিরানা ঘরানা, ইন্দোর আমীর খাঁ সাহেবের ঘরানা, পণ্ডিত অমরনাথ গুরুজী, আমার শান্তিদিদির ঘরানা সম্পর্কে যত জেনেছি তত আশ্চর্য হয়েছি। আমি খুব কনশাসলি এখানে আসিনি। ছোট বেলা থেকেই আমীর খাঁ সাহেবের গান ভাল লাগত, কেন তা জানতাম না। এখন মনে হয় এই ঘরানার সাউন্ড প্রোডাকশন অত্যন্ত সায়েন্টেফিক। নান্দনিকতা ও আধ্যাত্মিকতার অপূর্ব সংমিশ্রণ আছে যা সকলের শ্রাব্য ও শ্রুতিমধুর। দিদি এই ঘরানার ভালবাসায় পড়েছিলেন। আমাদের গল্প করেছেন অনেকবার। শৈশবে মার কাছে সঙ্গীতে হাতেখড়ি। মা ছিলেন কর্নাটকি শিল্পী। কিন্তু আমীর খাঁ সাহেবের গান শুনে তাঁর হিন্দুস্থানী সঙ্গীতে আকর্ষণ জন্মেছিল। তাঁর প্রথম গুরু শ্রী সঙ্গমেশ্বর গুরু।

শান্তিদিদির অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল ইন্দোর ঘরানার পথিকৃত আমীর খাঁ সাহেবের কাছে গান শিখবেন। কিন্তু তখন তিনি বিখ্যাত ইওঞঝ চরষধহর-তে রসায়নে অধ্যয়নরত, তাই বম্বেতে যেতে পারবেন না। এরই মধ্যে যখন তিনি অনার্সের ছাত্রী, কলকাতায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় আমীর খাঁ সাহেবের মৃত্যু হয়। তাঁর ২০ বছরের শিষ্য পণ্ডিত অমরনাথ গুরুজী শোকে বিহবল হয়ে একবছর গান করতে পারছিলেন না। ১৯৭৭ এ আমীর খাঁ সাহেবের জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে অমরনাথ গুরুজী আবার গান শুরু করলেন ত্রিবেনী কলাসঙ্গমে। দিদি সেদিন আমীর খাঁ সাহেবের শিষ্যের গান শুনতে B.I.T.s Pillani থেকে বাসে করে একা দিল্লীতে চলে এসেছিলেন। গান শুনে শান্তিদিদি বিমোহিত হন একেবারেই আমীর খাঁ সাহেবের মত কণ্ঠ ও গায়কী শুনে। তারপর গুরুজীকে বললেন তাঁর মনের কথা, তিনি পণ্ডিত অমরনাথজীর শিষ্যা হতে চান। গুরুজী বললেন, "তোমার মাস্টার্স শেষ করে তবেই দিল্লী আসো। দেখি কী করা যায়। আমি তো এখন কাউকে শেখাই না।" এর কিছুদিন পর গুরুজী শ্রীরাম ভারতীয় কলাকেন্দ্রে গুরু হিসাবে যোগ দিলেন। আর শান্তিদিদিও ততদিনে মাস্টার্স শেষ করে কেন্দ্রের হোস্টেলে থেকে অমর নাথ গুরুজীর কাছে শেখা শুরু করলেন। এভাবেই গুরুজীর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত টানা ১৫ বছর শান্তিদিদি অমরনাথ গুরুজীর কাছেই শিখেছেন। এরই মাঝে দিদিরই B.I.T.s Pillani-র বন্ধু দিনেশ শর্মাকে বিয়ে করেন এবং দুই সন্তান ভানু ও কানুর জন্ম দেন। একই সাথে চলতে থাকে শিক্ষকতা, ভারতীয় কলাকেন্দ্রে এবং গুরুজীর কাছে তালিম ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ। সংসার এবং শিল্পীসত্তা, প্রতিষ্ঠা এই সব কিছু গোছাতে তাকে অপরিসীম কষ্টের ভিতর দিয়ে যেতে হয়েছে। যুঝতে হয়েছে বহু কিছুর সঙ্গে। উচ্চমধ্যবিত্ত গোঁড়া শ্বশুরকুল রক্ষা করে উচ্চাঙ্গসঙ্গীত সাধনা করতে দিদির মত অতি প্রতিভাবান মানুষেরও বেগ পেতে হয়েছে।

নিজের বাড়ি ছেড়ে হোস্টেলে থেকে দিনরাত প্র্যাকটিস করে নিজেকে তৈরি করেছেন। তাই বলতেন, যা করার তাড়াতাড়ি করো, সময় নেই বেশি আমাদের। আমাদের এক্সট্রা অনেক বার্ডেন নিতে হয়। তাঁর মধ্যে এমন অনেক দিক মাঝে মাঝে আবিষ্কার করতাম, যা তিনি সবাইকে দেখতে দিতেন না। গত বছর একবার ক্লাসের পর আমরা কেন্দ্রের সিঁড়ির কাছে দাঁড়িয়ে আছি দিদির পাশে। হঠাৎ ভীষণ বাতাস। দিল্লীতে মান্ডী হাউসে অনেক শিমুল গাছ, তাই মে মাসের মাঝামাঝি সেই ঝড়ে শিমুল তুলা ওড়া শুরু হল। দেখতে মনে হচ্ছিল স্নোফল। দিদির সেই কী শিশুসুলভ খুশী। তিনি তুলো কুড়োতে শুরু করলেন। আমরাও তুলো কুড়িয়ে দিদিকে দিতে লাগলাম।

তাঁর প্রতিবাদী আরেক দিক আবিষ্কার করলাম যখন তাঁকে জানালাম আমি হোস্টেলের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ জানিয়েছি ডিরেক্টর শোভা দীপক সিংকে এবং মীরা মহাপাত্র ওয়ার্ডেনকে। তিনি রীতিমত আমার লেখা অ্যাপ্লিকেশন চেক করে দিলেন যেন ভাষাটা যথাযথ কড়া হয়। "বেটি, তুমহারে সাথ হু।" দিদি যতক্ষণ বাড়ি না যেতেন আমরা দিদির সাথে থাকতাম। দিদিকে গাড়িতে উঠিয়ে তারপর আমি রুমে যেতাম। একদিন গাড়িতে উঠে আমার দিকে একটি ছোট বাটি আগিয়ে দিয়ে বললেন, "বেটি ইয়ে তুমহারে লীয়ে, তুম তো হোস্টেল পে র‌্যাহতে হো, ঘরকা খানা নাহি মিলতা।" খুলে দেখি গাজরের হালুয়া।

তাঁর ক্লাসে যে কোনো প্রয়োজনে কেন জানি আমাকে বলতেন। তাঁর জন্য কিছু করতে আমি সদা প্রস্তুত। কিন্তু কিছুই করতে পারিনি, এত অল্প সময়ে। আমি তাঁর সাথে প্রায়ই তানপুরা বাজাতে বসতাম। একদিন দিল্লী ইউনিভার্সিটির অ্যালমনাই প্রোগ্রামে বাগেশ্রী গাইলেন। সুফী এনায়েত খাঁর দরগাহতে তিনি অসাধারণ ইমন গেয়েছিলেন। আরেকটি স্মরণীয় দিনের কথা। দিদির একটা সিডির রেকর্ডিং ছিল। দিদি আমাকে আর সোনিয়া দিদিকে নিয়ে গেছিলেন। প্রথমে গাওয়া শুরু করলেন আহীর ভৈরব, আলাপ তারপর মধ্যলয় বিস্তার। তখন তাঁকে মনে হচ্ছিল সুরের এক জাজ্জ্বল্য প্রতিচ্ছবি। আমাদেরকে পবিত্র করছেন আলাপের আবহে। ভোরের পবিত্র নির্মল রূপ সৃষ্টি করলেন যাতে অবগাহন করে মনে হচ্ছিল আমি নির্মল, মুক্ত। আমি আছি কিন্তু নেই। সুরই যেন সবকিছু। আরেক অপার রূপ সৃষ্টি করলেন যেদিন গতবছর মার্চে শঙ্করলাল ফেস্টিভ্যালে পূরবী গাইলেন। ফরিদাবাদে দিদির সাথে গিয়েছিলাম spie macy-র পারফর্মেন্স এবং মিউজিক ডেমনেস্ট্রেশন শুনতে। ফরিদাবাদেরই একজন ম্যাজিস্ট্রেট এক ডাক্তার ছিলেন অতিথি। তিনি দিদির সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছিলেন, মানুষের মস্তিকের দু'টি ভাগ থাকে, রাইট ফ্যাকাল্টি এবং লেফট ফ্যাকাল্টি। একটা অংশ মানুষের ক্রিয়েটিভ সত্তার জন্য দায়ী, আরেকটা অংশ লজিক্যাল অংশ, যেমন গণিত, বিজ্ঞান, যুক্তিবোধ প্রভৃতির জন্য দায়ী। শান্তিদিদি হচ্ছেন একজন পরিপূর্ণ মানুষ, যার দু'টি অংশই সমানভাবে পরিণত, কারণ তিনি রসায়নে স্নাতকোত্তর এবং গুণী সঙ্গীত শিল্পী। সেদিনের অনুষ্ঠানে স্কুলের অধ্যয়নরত কিশোর-কিশোরীদের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতকে বোধগম্য এবং শ্রুতিমধুর করে এত সহজ সাবলীল ভাবে পরিবেশন করেছিলেন, কথা বলে বোঝাতে বোঝাতে যাতে যে-কেউই আহীর ভৈরব এবং ভৈরবীর রস আস্বাদন করতে পারবে। আমার দিদির কাছে শেখা শেষ রাগ দূর্গা। গত শরতে একদিন সকালে শিখেছিলাম। সেদিন তিনি হঠাৎ দূর্গা শেখানো শুরু করেছিলেন। শুধু সুরের আলাপেই 'বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ বেঁধেছি শেফালি মালা'র চিত্রকল্প রচনা করেছিলেন তিনি।

আমি এখনও ভাবতে পারছি না আমার দিদিকে আমি আর দেখতে পাব না। গত ২২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১১টায় আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন অভিমানী শান্তিদিদি, স্বেছায় চলে গেছেন জীবন মৃত্যুর ঊর্ধ্বে। সেই সাথে আমরা হারিয়েছি ইন্দোর-কিরানার এক গান্ধর্বীকে। গন্ধর্বলোকে যার জন্ম।